মারা গেছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা। ৬০ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিলেন বিশ্ব ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা তারকা।
বুধবার (২৫ নভেম্বর) রাতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে নিজ বাসায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
ডিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনার জন্ম ৩০ অক্টোবর ১৯৬০ সালে। একজন আর্জেন্টিনীয় ফুটবল কোচ সেইসাথে একজন ম্যানেজার এবং প্রাক্তন খেলোয়াড়। অনেক বিশেষজ্ঞ, ফুটবল সমালোচক, প্রাক্তন ও বর্তমান খেলোয়াড় এবং ফুটবল সমর্থক তাকে সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে গণ্য করেন। তিনি ফিফার বিংশ শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড়ে পেলের সাথে যৌথভাবে ছিলেন।
নভেম্বরের শুরুতে আর্জেন্টিনার সাবেক অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার এবং কোচের ব্রেনের সফল অস্ত্রোপাচার হয়েছিল। সে সময় অতিরিক্ত অ্যালকোহলের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় ম্যারাডোনা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়েছিলেন বলে জানানো হয়েছিল।
এর আগেও বেশ কয়েকবার মৃত্যুর মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। মাঠ এবং মাঠের বাইরে সমানভাবে আলোচনায় থাকা ম্যারাডোনা ২০০০ সালে একেবারে মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। সেবার দীর্ঘদিন পর হাসপাতাল থেকে মুক্তি পান তিনি। ২০০৫ সালেও জটিল রোগে ভুগতে হয়। পরবর্তীতে ২ বছর পুনর্বাসনে কাটাতে হয় তাকে।
বিশ্ব ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে বিবেচিত ম্যারাডোনার নেতৃত্বে ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা। টুর্নামেন্টে তার জাদুময় পারফরম্যান্স মন ভরিয়ে দিয়েছিল ফুটবল প্রেমীদের।
ক্লাব পর্যায়ে তিনি বার্সেলোনা অধ্যায় শেষে যোগ দেন নাপোলিতে। এখানেও নিজের একক নৈপুণ্যে ইতালিয়ান ক্লাবটিকে দু’টি লিগ শিরোপা জেতান ম্যারাডোনা। আর্জেন্টিনার জার্সিতে ৯১ ম্যাচে ৩৪ গোল করেছেন তিনি। খেলেছেন ৪টি বিশ্বকাপে। ম্যারাডোনার নেতৃত্বে ১৯৯০ সালের ইতালি বিশ্বকাপেও ফাইনালে খেলে আর্জেন্টিনা। তবে সেবার তারা হেরে যায় পশ্চিম জার্মানির কাছে। পরে ১৯৯৪ সালের যু্ক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় তাকে নিষিদ্ধ করা হয়। এফেড্রিন নামক ড্রাগ নিয়ে ম্যারাডোনা খেলতে নেমেছিলেন, এমন দাবি করা হয়।
ক্যারিয়ারের দ্বিতীয়ার্ধে, তিনি কোকেইন আসক্তির সঙ্গে লড়াই করতে থাকেন এবং ১৯৯১ সালে ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় ১৫ মাস নিষিদ্ধ হন। ম্যারাডোনা পেশাদারি ফুটবল থেকে অবসর নেন ১৯৯৭ সালে, তার ৩৭তম জন্মদিনে। আর্জেন্টাইন জায়ান্ট বোকা জুনিয়র্সে নিজের দ্বিতীয় স্পেলে থাকার সময় বুটজোড়াকে চিরতরে অবসর পাঠান তিনি।
বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাবগুলো মাতিয়েছেন ম্যারাডোনা। ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলিকে বিশ্বদরবারে পরিচিত করে তুলেছিলেন তিনি। তবে সব ছাপিয়ে, ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনাকে একক নৈপুণ্যে বিশ্বকাপ জেতানোর জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন এই কিংবদন্তি ফুটবলার।